শুষ্ক কোষ বা ড্রাই সেল হচ্ছে এক প্রকার গ্যালভানিক সেল যা সাধারণত ব্যাটারি হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
এটি একটি বৈদ্যুতিক শক্তি উৎস, যা রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন করে।
শুষ্ক কোষের গঠন:
- অ্যানোড: শুষ্ক কোষের অ্যানোড হলো দস্তার (Zn) তৈরি, যা কোষের বহিঃস্ত স্তর হিসাবেও কাজ করে।
- ক্যাথোড: কোষের কেন্দ্রস্থল অংশে কার্বন রড (C) থাকে, যা ক্যাথোড হিসেবে কাজ করে।
- ইলেক্ট্রোলাইট: কোষের ভেতরে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (NH₄Cl) এবং জিঙ্ক ক্লোরাইড (ZnCl₂) এর জলীয় দ্রবণ, যা পেস্ট আকারে ব্যবহার করা হয়।
এর সাথে কার্বনচূর্ণ মিশ্রিত করা হয়।
শুষ্ক কোষ তৈরির
পদ্ধতি:
প্রথমে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড, কয়লার গুঁড়া ও ম্যাঙ্গানিজ ডাই-অক্সাইড
ভালোভাবে মিশিয়ে তাতে অল্প পরিমাণ পানি যোগ করে একটি পেস্ট বা লেই তৈরি করা হয়। এই
মিশ্রণটি সিলিন্ডার আকৃতির দস্তার চোঙে নিয়ে তার মধ্যে একটি কার্বন দণ্ড এমনভাবে
বসানো হয়, যাতে দণ্ডটি দস্তার চোঙকে স্পর্শ না করে। কার্বন দণ্ডের মাথায় একটি টুপি
পরানো থাকে। শুষ্ক কোষের ওপরের অংশ কার্বন দণ্ডটির চারপাশ পিচের আস্তরণ দিয়ে ঢেকে
দেওয়া হয়। দস্তার চোঙটিকে একটি শক্ত কাগজ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। এখানে দস্তার চোঙ
ঋণাত্মক তড়িত্দ্বার বা ক্যাথোড হিসেবে কাজ করে আর ধাতব টুপি দিয়ে ঢাকা কার্বন
দণ্ডের উপরিভাগ ধনাত্মক তড়িত্দ্বার বা অ্যানোড হিসেবে কাজ করে।
শুষ্ক কোষের কার্য প্রণালী:
শুষ্ক কোষের কার্য প্রণালীতে, দস্তার অ্যানোড অক্সিডাইজড হয়ে জিঙ্ক আয়ন (Zn²⁺) ও ইলেকট্রন (e⁻) উৎপন্ন করে। এদিকে, ক্যাথোডে ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড (MnO₂) রিডিউসড হয় এবং পানি (H₂O) এর সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH⁻) উৎপন্ন করে।
বিস্তৃত জানতে এই লিংকে চাপ দাও বা নিচের ভিডিও দেখো।
রাসায়নিক সমীকরণ:
অ্যানোড বিক্রিয়া: Zn (s) → Zn²⁺ (aq) + 2e⁻
ক্যাথোড বিক্রিয়া: 2MnO₂ (s) + 2NH₄⁺ (aq) + 2e⁻ → Mn₂O₃ (s) + 2NH₃ (aq) + H₂O (l)
সমগ্র কোষ বিক্রিয়া: Zn (s) + 2MnO₂ (s) + 2NH₄⁺ (aq) → Zn²⁺ (aq) + Mn₂O₃ (s) + 2NH₃ (aq)
এই বিক্রিয়াগুলি শুষ্ক কোষে ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন করে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন