সোমবার, ৭ মে, ২০১৮

তোমরা যারা ভালো রেজাল্ট করনি..


গতকাল এস.এস.সি. পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে। অনেকেই আকাঙ্খিত রেজাল্ট করেছ আবার অনেকেই করনি। আমার লেখাটা তাদের জন্য যারা আকাঙ্খিত ফল লাভ করনি। কিছু অপ্রিয় বাস্তবতা তুলে ধরতেই আমার এ লেখা। যদিও সকলই লেখা পড়তে পারবে।

যারা খারাপ করেছ, তোমাদেরকে কোনো মোটিভেশনাল কথা আমি বলছিনা। আইনস্টাইনের গণিতে ফেল করা বা মার্ক জুকারবার্গ অথবা বিল গেটসের বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রপ আউটের কাহিনীও শুনাচ্ছিনা।আমি তোমাদেরকে এই পরীক্ষার ফল থেকে পরবর্তী জীবনের জন্য একটা শিক্ষা নিতে বলছি। শিক্ষাটা হচ্ছে বাস্তবতাকে মেনে নেয়া। অন্য কথায় বলা যায় অবসম্ভাবিকে মেনে নেয়া। যা ঘটে গেছে বা যা ঘটার উপর তোমার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই তাকে মেনে নিতে শেখ। মনেকর তুমি পরীক্ষায় খারাপ ফল করেছ। তাহলে এটাকে মেনে নাও। এই ফলের উপর এখন তোমার কোনো হাত নেই। যতই কান্না-কাটি কর, মনখারাপ করে থাক, কর্তৃপক্ষকে গালাগালি কর, দোষ দাও, অনুশচনা বা হতাশায় ভোগ তোমার ফল তুমি পরিবর্তন করতে পারবেনা। তাই এটাকে মেনে নিতে শেখ। এটা জীবন পথে চলার জন্য খুব বড় একটা শিক্ষা। সারা জীবনে এমন বহু ঘটনা ঘটবে যার উপর তোমার নিয়ন্ত্রণ থাকবেনা। তোমার বাবা-মা বা ভালোবাসার কেউ মারা যেতে পারে, চাকরি  চলে যেতে পারে, সংসার ভেঙে যেতে পারে, ব্যবসায় লস করে আর্থিক দুর্গতি হতে পারে, ঝড়ে বাড়ি-ঘর ভেঙে যেতে পারে, দুর্ঘটনায় শরীরের কোনো অঙ্গহানি ঘটতে পারে বা অন্য কিছু। তোমাকে এসব মেনে নিতেই হবে। না নিয়ে সুষ্ঠুভাবে, সুন্দর ও সুখীভাবে জীবন পথ পাড়ি দিতে পারবেনা। তাই তোমার পরীক্ষার ফল থেকে শিক্ষা নিতে বলি। যা অবসম্ভাবি, বাস্তব তাকে মেনে নিতে হবে।

দ্বিতীয় যে শিক্ষাটা নিতে বলি তা হল ক্ষতি কমানো। অর্থাৎ বাস্ববতাকে যখন মেনে নিবে তখন তোমার পরবর্তী কাজ হবে ক্ষতি কমনো। পরীক্ষায় ভালো না করে মনখারাপ করে থাকলে তোমার শরীরের রাসায়নিক পরিবর্তন হবে। বদহজম হবে, ঘুম হবেনা ভালোকরে, হৃদরোগ হবে, চেহারার লাবণ্য নষ্ট হবে। বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন যারা তোমাকে ভালোবাসেন তারা কষ্ট পাবে। তোমার বন্ধুটিও কষ্ট পাবে। এত কিন্তু তোমার পরীক্ষার ফল ভালো হয়ে যাবেনা। তার থেকে ক্ষতি আরো বাড়বে। তাই বলি এবার ক্ষতি কমও। ভাব, কেন এমন হল। কি জন্য তোমার রেজাল্ট খারাপ হল। তুমি পড়ালেখার তুলনায় সামাজিক মাধ্যমে কি বেশি ব্যস্ত ছিলে? বন্ধুদের সাথে আড্ডাটা কি একটু বেশীই দিয়ে ফেলেছিলে? পড়ালেখা বাদে অন্যদিকে মনোযোগ কি একটু বেশীই ছিল? তোমার আত্মবিশ্বাস কি একটু অতিরিক্ত ছিল? তুমি পড়ালেখার সময় অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলে? নাকি তুমি তোমার পড়া কম বুঝ? সায়েন্সের সাবজেক্টের পড়া মাথায় ঢোকেনা। এগুলো ভেবে বের কর। তারপর সিদ্ধন্ত নাও। এ কাজ গুলো আর করবেনা। যেন পরবর্তীতে আর অনুশুচনা না করতে হয়। পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে তুমি আরো একটা পাবলিক পরীক্ষার মুখোমুখি হবে। মনে মনে প্রতিজ্ঞা কর, যেন সেই পরীক্ষার পর হাসি মুখে সবাইকে তার ফল জানাতে পার। ভবিষ্যৎ জীবনেও এই শিক্ষাটা খুব গুরুত্বপূর্ন। ব্যবসায় লস করলে তা নিয়ে হতাশ হওয়া যাবেনা। বরং তা মেনে নিয়ে খাতা নিয়ে বসতে হবে। কেন লস হল? কি কি ভাবে সেই লস কাটিয়ে ওঠা যায়। কিভাবে নতুন করে বিনিয়োগ করে লাভ করা যায়। এরকম সব ক্ষেত্রে চেষ্টা করতে হবে।

সব শেষে বলি, তোমার জীবন মাত্র শুরু। তুমি জানোনা ভবিষ্যতে তুমি ঠিক কোন অবস্থায় থাকবে। সেটা তোমার বর্তমান কাজই ঠিক করবে কোথায় যাবে তুমি। তাই হতাশ না হয়ে কাজ করো। দেথবে সফলতা আসবেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

বেন্থাম ও হুকারের প্রাকৃতিক শ্রেণিবিন্যাস

জর্জ বেন্থাম (১৮০০-১৮৮৪) ও যোসেফ ড্যালটন হুকার (১৮১৭-১৯১১) একত্রে প্রায় ৪০ বছর লন্ডন শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত কিউ উদ্যানে গবেষণা করেন। তাঁরা ১৮...