শুক্রবার, ১ নভেম্বর, ২০২৪

পেঁয়াজ কাটলে চোখ দিয়ে পানি বের হয় কেন?

 যদি আপনার কখনো জানতে ইচ্ছে করে- পেঁয়াজ কাটলে চোখ দিয়ে পানি বের হয় কেন? তবে এই লেখাটি আপনার জন্য।

ঠিক আছে, আসুন একটু বিস্তারিতভাবে দেখি। যখন আপনি পেঁয়াজ কাটেন, তখন এর কোষগুলো ভেঙে যায়। এই কোষগুলোতে দুটি প্রধান যৌগ থাকে:

1.      অ্যালিনেজ এনজাইম: এটি পেঁয়াজের কোষগুলোতে থাকে।

2.      অ্যামিনো অ্যাসিড সালফোক্সাইডস: এটি প্রাকৃতিক সালফার যৌগ যা পেঁয়াজে পাওয়া যায়।

যখন আপনি পেঁয়াজ কাটেন, তখন এই দুটি যৌগ একে অপরের সাথে মিশে যায় এবং এক ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়। এই বিক্রিয়া থেকে গ্যাস তৈরি হয়, যা প্রোপেনেথিয়াল এস-অক্সাইড (C3H6OS) নামে পরিচিত। এই গ্যাস বাতাসে ভাসতে থাকে এবং বাতাসে ভেসে যখন আপনার চোখে প্রবেশ করে তখন তা চোখের সংবেদনশীল স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে। ফলে, আপনার চোখে একটি প্রতিরক্ষামূলক প্রতিক্রিয়া ঘটে এবং অশ্রু গ্রন্থি থেকে পানি বের হয়, যা চোখকে সংবেদনশীল অবস্থায় রক্ষা করতে সাহায্য করে।

এই পুরো প্রক্রিয়াটি বেশ দ্রুত ঘটে, তাই আমরা পেঁয়াজ কাটতে শুরু করার পরই দ্রুত চোখে জল অনুভব করি। পেঁয়াজের এই প্রাকৃতিক প্রতিক্রিয়া থেকে আমাদের চোখকে রক্ষা করতে আমরা কিছু পন্থা অবলম্বন করতে পারি, যেমন পেঁয়াজ কাটার সময় ঠান্ডা পানিতে ভেজানো বা পেঁয়াজ ফ্রিজে রেখে কাটা।

এবার বুঝতে পারলেন, পেঁয়াজ কাটার সময় কেন চোখে পানি চলে আসে? 😊

বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪

অবাত শ্বসনে CO2 গ্যাস নির্গমনের পরীক্ষা।

পরীক্ষণের নাম: অবাত শ্বসনে CO2 গ্যাস নির্গমনের পরীক্ষা।

 তত্ত্ব:

শ্বসন একটি জৈবনিক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় O-এর উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে কোষের জৈব খাদ্য জারণের মাধ্যমে শক্তি নির্গত হয় এবং উপজাত দ্রব্য হিসেবে CO ও H2O উৎপন্ন হয়।

অবাত শ্বসন O এর অনুপস্থিতিতে ঘটে থাকে। এতে শ্বসনিক বস্তু অসম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে C2H5OH (ইথাইল অ্যালকোহল) ও CO উৎপন্ন হয় এবং অল্প পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়।

 উপকরণ: একটি টেস্ট টিউব, একটি পেট্রিডিস, পারদ, ক্ল্যাম্পসহ স্ট্যান্ড, কয়েকটি অঙ্কুরিত ভেজা ছোলা, একটি বাঁকা চিমটা ও কষ্টিক পটাশ (KOH)-এর টুকরা।

 কার্যপদ্ধতি:

১. প্রথমে অঙ্কুরিত ছোলাবীজগুলোর খোসা ছাড়িয়ে রাখতে হবে।

২. এরপর ছোট বিকারটিতে কিছু পারদ ঢালতে হবে।

৩. টেস্ট টিউবটি পারদ দিয়ে সম্পূর্ণ ভর্তি করতে হবে।

৪. এবার টেস্ট টিউবের মুখ বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরে পেট্রিডিসে পারদের ওপর উপুড় করে স্ট্যান্ডের সাথে ক্লিপ দিয়ে আটকাতে হবে। টেস্ট টিউবটি এমনভাবে আটকাতে হবে যাতে এর মুখ পারদপূর্ণ পেট্রিডিসের তলা স্পর্শ না করে।

৫. এখন ছোলাবীজগুলো বাঁকা চিমটার সাহায্যে একটা একটা করে টেস্ট টিউবের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে হবে। ছোলাবীজগুলো পারদের চেয়ে হালকা বলে টেস্ট টিউবের উপরের প্রান্তে উঠে যাবে। ছোলাবীজ ঢুকানোর সময় টেস্ট টিউবে যাতে বায়ু প্রবেশ না করে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। এই অবস্থায় পর্যবেক্ষণের জন্য একদিন রেখে দিতে হবে।



পর্যবেক্ষণ:

একদিন পর দেখা যাবে টেস্ট টিউবের পারদ স্তম্ভ কিছুটা নিচে নেমে এসেছে। এ অবস্থায় এক টুকরা কস্টিক পটাশ বাঁকা চিমটার সাহায্যে টেস্ট টিউবে প্রবেশ করালে দেখা যাবে টেস্ট টিউবের ফাঁকা স্বান পুনরায় পারদ দিয়ে পূর্ণ হয়ে গেছে।

 সিদ্ধান্ত:

১. প্রথমে সম্পূর্ণ পারদ দিয়ে পূর্ণ থাকা টেস্ট টিউবের মধ্যে অক্সিজেন ছিল না।

২. টেস্ট টিউবের মধ্যে বাতাস না থাকায় ছোলাবীজের অবাত শ্বসনে যে CO-গ্যাস নির্গত হয়েছে তার জন্যই পারদ স্তম্ভ নিচে নেমেছে।

৩. কষ্টিক পটাশ প্রবেশ করানোর ফলে ঐ CO গ্যাস শোষিত হওয়ায় পারদ স্তম্ভ আবার উপরে উঠেছে। আমরা জানি কস্টিক পটাশ CO-গ্যাস শোষণ করে।

 অতএব এই পরীক্ষা দিয়ে প্রমাণিত হলো যে- অবাত শ্বসনে CO-গ্যাস নির্গত হয়।

 সতর্কতা:

১. অঙ্কুরিত ছোলাবীজ নিতে হবে এবং ছোলাবীজের খোসা ছাড়িয়ে ফেলতে হবে।

২. টেস্ট টিউবটি সম্পূর্ণভাবে পারদ পূর্ণ করতে হবে যাতে টেস্ট টিউবে বাতাস না থাকে।

৩. টেস্ট টিউবের মুখ যেন পারদের মধ্যে থাকে এবং পেট্রিডিসের তলদেশ স্পর্শ না করে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

৪. ছোলাবীজ ঢুকানোর সময় টেস্ট টিউবে যাতে বায়ু প্রবেশ না করে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪

শুষ্ক কোষ বা ড্রাই সেলের গঠন ও কার্যপ্রণালী নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা

শুষ্ক কোষ বা ড্রাই সেল হচ্ছে এক প্রকার গ্যালভানিক সেল যা সাধারণত ব্যাটারি হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

এটি একটি বৈদ্যুতিক শক্তি উৎস, যা রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন করে।

শুষ্ক কোষের গঠন:

  • অ্যানোড: শুষ্ক কোষের অ্যানোড হলো দস্তার (Zn) তৈরি, যা কোষের বহিঃস্ত স্তর হিসাবেও কাজ করে।
  • ক্যাথোড: কোষের কেন্দ্রস্থল অংশে কার্বন রড (C) থাকে, যা ক্যাথোড হিসেবে কাজ করে।
  • ইলেক্ট্রোলাইট: কোষের ভেতরে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (NHCl) এবং জিঙ্ক ক্লোরাইড (ZnCl) এর জলীয় দ্রবণ, যা পেস্ট আকারে ব্যবহার করা হয়। এর সাথে কার্বনচূর্ণ মিশ্রিত করা হয়।

শুষ্ক কোষ তৈরির পদ্ধতি:

প্রথমে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড, কয়লার গুঁড়া ও ম্যাঙ্গানিজ ডাই-অক্সাইড ভালোভাবে মিশিয়ে তাতে অল্প পরিমাণ পানি যোগ করে একটি পেস্ট বা লেই তৈরি করা হয়। এই মিশ্রণটি সিলিন্ডার আকৃতির দস্তার চোঙে নিয়ে তার মধ্যে একটি কার্বন দণ্ড এমনভাবে বসানো হয়, যাতে দণ্ডটি দস্তার চোঙকে স্পর্শ না করে। কার্বন দণ্ডের মাথায় একটি টুপি পরানো থাকে। শুষ্ক কোষের ওপরের অংশ কার্বন দণ্ডটির চারপাশ পিচের আস্তরণ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। দস্তার চোঙটিকে একটি শক্ত কাগজ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। এখানে দস্তার চোঙ ঋণাত্মক তড়িত্দ্বার বা ক্যাথোড হিসেবে কাজ করে আর ধাতব টুপি দিয়ে ঢাকা কার্বন দণ্ডের উপরিভাগ ধনাত্মক তড়িত্দ্বার বা অ্যানোড হিসেবে কাজ করে।

শুষ্ক কোষের কার্য প্রণালী:

শুষ্ক কোষের কার্য প্রণালীতে, দস্তার অ্যানোড অক্সিডাইজড হয়ে জিঙ্ক আয়ন (Zn²)  ইলেকট্রন (e) উৎপন্ন করে। এদিকে, ক্যাথোডে ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড (MnO) রিডিউসড হয় এবং পানি (HO) এর সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রোক্সাইড আয়ন (OH) উৎপন্ন করে।

বিস্তৃত জানতে এই লিংকে চাপ দাও বা নিচের ভিডিও দেখো।



রাসায়নিক সমীকরণ:

অ্যানোড বিক্রিয়া: Zn (s) → Zn²⁺ (aq) + 2e

ক্যাথোড বিক্রিয়া: 2MnO₂ (s) + 2NH₄⁺ (aq) + 2e⁻ → MnO₃ (s) + 2NH₃ (aq) + HO (l)

সমগ্র কোষ বিক্রিয়া: Zn (s) + 2MnO₂ (s) + 2NH₄⁺ (aq) → Zn²⁺ (aq) + MnO₃ (s) + 2NH₃ (aq)

এই বিক্রিয়াগুলি শুষ্ক কোষে ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন করে।

 

শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অনুশীলনের জন্য ৩০ টি রাসায়নিক বিক্রিয়া নিম্নে দেওয়া হল-


1.     মিথেনের দহন বিক্রিয়া: CH4+2O2→CO2+2H2O

2.     লোহায় মরিচা পড়ার বিক্রিয়া: 4Fe+3O2→2Fe2O3

3.     সালোকসংশ্লেষণ: 6CO2+6H2O+সূর্যের আলো→C6H12O6+6O2

4.     পানির বিযোজন বিক্রিয়া: 2H2O→2H2+O2

5.     প্রশমন বিক্রিয়া: HCl+NaOH→NaCl+H2O

6.     সোডিয়ামের সাথে পানির বিক্রিয়া: 2Na+2H2O→2NaOH+H2

7.     বেকিংসোডার সাথে ভিনেগারের বিক্রিয়া: NaHCO3+CH3COOH→CH3COONa+H2O+CO2

8.     হাইড্রোজেনের সাথে অক্সিজেনের বিক্রিয়া: 2H2+O2→2H2O

9.     সোডিয়াম ক্লোরাইড সিলভার নাইট্রেটের বিক্রিয়া: NaCl+AgNO3→AgCl+NaNO3

10.   জিংক হাইড্রোক্লোরাইড এসিডের বিক্রিয়া: Zn+2HCl→ZnCl2+H2

11.   ক্যালসিয়াম কার্বোনেটে তাপ প্রদানের বিক্রিয়া: CaCO3→CaO+CO2

12.   সোডিয়াম বাইকার্বোনেটের বিযোজন: 2NaHCO3→Na2CO3+H2O+CO2

13.   কপারের সাথে সালফিউরিক এসিডের বিক্রিয়া Cu+2H2SO→ CuSO+ 2H2O + SO2

14.   ম্যাগনেসিয়ামের সাথে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের বিক্রিয়াMg+2HCl →MgCl2+H2


এই ফাইলেন পিডিএফ ফাইলের জন্য এই লিংকে চাপ দাও।


15.   লোহার সাথে সালফারের বিক্রিয়া: Fe+S →FeS

16.   হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের বিযোজন বিক্রিয়া: 2H2O→2H2O+O2

17.   অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইডের বিযোজন বিক্রিয়া: NH4Cl →NH3+HCl

18.   সোডিয়াম ক্লোরিনের বিক্রিয়া: 2Na+Cl→2NaCl

19.   পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট ও হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের বিক্রিয়া: 2KMnO4+3H2O→2MnO2+2KOH+3O2+2H2O

20.   সোডিয়াম হাইড্রোঅক্সাইডের সাথে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের বিক্রিয়া: NaOH+HCl →NaCl+H2O

21.   ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের সাথে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের বিক্রিয়া: CaCO3+2HCl →CaCl2+H2O+CO2

22.   সোডিয়ামের সাথে পানির বিক্রিয়া: 2Na+2H2O →2NaOH+H2

23.   জিঙ্ক এর সাথে সালফিউরিক এসিডের বিক্রিয়া: Zn+H2SO→ZnSO4+H2

24.   ম্যাগনেসিয়াম অক্সিজেনের বিক্রিয়া: 2Mg+O→2MgO

25.   হাইড্রোজেন ক্লোরিন এর বিক্রিয়া: H2+Cl→2HCl

26.   সোডিয়ামের সাথে নাইট্রোজেন এর বিক্রিয়া: 6Na+N→2Na3N

27.   ক্যালসিয়ামের সাথে পানির বিক্রিয়া: Ca+2H2O →Ca(OH)2+H2

28.   পটাশিয়ামের সাথে পানির বিক্রিয়া: 2K+2H2O →2KOH+H2

29.   সোডিয়ামের সাথে কার্বনডাইঅক্সাইডের বিক্রিয়া: 2Na+CO→Na2CO3

30.   লোহার সাথে অক্সিজেনের বিক্রিয়া: 4Fe+3O→2Fe2O3

পেঁয়াজ কাটলে চোখ দিয়ে পানি বের হয় কেন?

  যদি আপনার কখনো জানতে ইচ্ছে করে- পেঁয়াজ কাটলে চোখ দিয়ে পানি বের হয় কেন? তবে এই লেখাটি আপনার জন্য। ঠিক আছে, আসুন একটু বিস্তারিতভাবে দেখি। ...